অভিনবকে লাবণ্যর খোলা চিঠি-১৭
প্রিয় অভি,
তোমার সঙ্গে দেখা হবে বলে চাঁদের গায়েও মহুয়ার ঘ্রাণ লেগেছিলো। দেখা হতেই
আকাশের ক্যানভাসে মেঘের প্রচ্ছদের গভীরে যেন তারা পথ হারালো। কত অমোঘ
সৃষ্টিছাড়া সময় অতিক্রম করে তোমার সাথে আবার দেখা হবার এই মুহূর্ত পেলাম
জানিনা।পথের বুক থেকে তুলে নিলাম তোমায়,যেন এইমাত্র রেখে গিয়েছিলাম তোমায়,
আমার জন্য প্রতীক্ষারত।কয়েক মিনিট তুমিও চুপ ,চুপ আমিও।ব্যাকুল আমি...সময়
পেরিয়ে যাচ্ছে...সময় পেরিয়ে যাচ্ছে... জমে আছে না বলা কথার অনিকেত জলধারা,
বরফরূপী... শতবর্ষব্যাপী ...
আমিই মুখ খুললাম প্রথম,‘কেমন আছিস?” তারপর সব কথা কেমন ভোরের বেহালা হয়ে
তরঙ্গিত চতুর্দিকে।আমার হাতে মরুরাত্রি ভর্তি পুরাতন খাতা,আজকের এই বন্যার
গানটি আমি কোথায় লিখি বলতো? চোখ জুড়ে বিগলিত ভালবাসা। চোখের শ্রাবণ ঝরে
পড়ার আগেই সত্যিকারের শ্রাবণ এলো,মাথা বাঁচাতে আমরা সেই পুরনো আশ্রয়ে
যেখানে আমাদের ভালবাসায় জন্ম হয়েছিল নতুন এক প্রণয়ঋদ্ধ ঋতু। আমরা তার নাম
রেখেছিলাম “অতিথি শ্রাবণ”।
একসাথে পথ হাঁটলাম কিছুদূর,আর সামান্য
পথ বাকি আমাদের পার্থিব গন্তব্যের,তারপর, তোমার অথই নদী আমার মরুতৃষ্ণা
বুকে বিপরীত দিকে ছুটে যাওয়া,ততক্ষন নতুন ঋতুর একটু খানি মেঘমাখানো আকাশ।
এরপর আর হয়ত দেখা হবে না আমাদের, হয়ত সহস্র বছর, হয়ত তারও বেশি। তবু জেনে
গেলাম আমার সুগন্ধে এখনও তোমার বুকে অস্থিরতা, তোমার উষ্ণতার মুখ ফেরানো
এখনও আমার দিকেই। না পাওয়ার এই নাম মাত্র জীবনে এও নেহাত কম নয় অভি। অনুরোধ
শুধু মাটির গভীরে মিশে যাবার আগেই তুমি নিংড়ে নিও আমার শেকড়ে সুপ্ত
প্রেমের নির্যাস,আর তাকে ফিরতে দিওনা আঁধারের অঞ্জলিতে,অচেনা পানপাত্রে।
ইতি
জন্মান্তরিত লাবণ্য
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন